সুস্থ থাকার উপায়: দৈনন্দিন জীবনে সহজ এবং কার্যকর স্বাস্থ্য টিপস
ভূমিকা
বর্তমান ব্যস্ত জীবনে সুস্থ থাকা যেন একটি চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহার, দুশ্চিন্তা, দূষণ, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাবের কারণে আমাদের শরীর ও মন দুটোই দুর্বল হয়ে পড়ছে। কিন্তু কিছু সাধারণ অভ্যাস গড়ে তুললেই আমরা সুস্থ জীবনযাপন করতে পারি।এই ব্লগে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো এমন কিছু বিজ্ঞানভিত্তিক ও বাস্তবসম্মত উপায় নিয়ে যা আপনার দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ করে আপনি সুস্থ থাকতে পারেন — দীর্ঘমেয়াদে।
১. সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা
কেন সুষম খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ?
সুস্থ থাকার অন্যতম প্রধান উপায় হলো প্রতিদিন সুষম খাবার খাওয়া। আমাদের শরীরকে প্রয়োজনীয় শক্তি, ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে সঠিক খাদ্যাভ্যাস।
কীভাবে খাবেন?
· প্রতিদিন শাকসবজি ও ফলমূল খান (বিশেষ করে মরিচ, গাজর, পেঁপে, আপেল, কলা)।
· প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন ডিম, মসুর ডাল, দুধ, মাছ ও মাংস খান পরিমাণ মতো।
· কার্বোহাইড্রেট থেকে শক্তি নিন (ভাত, রুটি, ওটস)।
· ট্রান্স ফ্যাট এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে দূরে থাকুন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সুষম খাদ্য
ও স্বাস্থ্যকর
খাদ্যাভ্যাস নিয়ে বিস্তারিত
জানিয়েছে এই লিংকে:
👉 Healthy Diet – WHO
২. পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম
ঘুম হলো প্রাকৃতিক হিলার। রাতে ভালো ঘুম শরীরের কোষ পুনঃগঠনে সাহায্য করে, মন সতেজ রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
কতক্ষণ ঘুমানো উচিত?
· প্রাপ্তবয়স্কদের দিনে ৭-৮ ঘণ্টা।
· শিশুদের জন্য ৯-১২ ঘণ্টা প্রয়োজন হতে পারে।
ঘুম ভালো করার টিপস:
· ঘুমাতে যাওয়ার আগে মোবাইল বা স্ক্রিন ব্যবহার কমান।
· একই সময়ে ঘুমাতে যান এবং উঠুন।
· শোবার ঘর হালকা ঠান্ডা ও অন্ধকার রাখুন।
৩. নিয়মিত ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রম
ব্যায়ামের উপকারিতা:
· ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
· ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে।
· মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাড়ায়।
কী ধরনের ব্যায়াম করবেন?
· প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা বা দৌড় দিন।
· সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন কার্ডিও ও স্ট্রেন্থ ট্রেনিং করুন।
· যোগব্যায়াম বা মেডিটেশন মন শান্ত রাখতে সাহায্য করে।
👉 Harvard Health: Benefits of Exercise
৪. মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা করা
মানসিক চাপ কীভাবে দূর করবেন?
· প্রতিদিন অন্তত ১৫-২০ মিনিট মনোযোগ (Mindfulness) অনুশীলন করুন।
· নিজের পছন্দের কাজ করুন – যেমন গান শোনা, বই পড়া বা চিত্রাঙ্কন।
· প্রয়োজনে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।
👉 Mental Health Support – NIMH
৫. পানীয়জলের সঠিক ব্যবহার
হাইড্রেশন কেন গুরুত্বপূর্ণ?
শরীরের প্রতিটি কোষ, টিস্যু এবং অঙ্গ ঠিকভাবে কাজ করার জন্য পানি অপরিহার্য। পানির অভাবে শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমে যায়।
দিনে কতটুকু পানি খাবেন?
· গড়ে ২–৩ লিটার (৮-১০ গ্লাস)।
· গরম আবহাওয়ায় বা ব্যায়াম করার পর আরও বেশি পানি প্রয়োজন হতে পারে।
৬. সঠিক স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও রোগ নির্ণয়
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা হলে শরীরের যে কোনো সমস্যা আগে থেকেই ধরা পড়ে। এতে দীর্ঘমেয়াদি জটিল রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
প্রয়োজনীয় রুটিন চেকআপ:
· রক্তচাপ
· ব্লাড সুগার
· লিপিড প্রোফাইল
· হিমোগ্লোবিন
· ইউরিন টেস্ট
৭. ধূমপান ও মাদক পরিহার
কেন এগুলো ক্ষতিকর?
ধূমপান এবং মাদক শরীরের ফুসফুস, লিভার, কিডনি, হৃদপিণ্ড এবং মস্তিষ্কের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এটি ক্যানসার, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
👉 CDC on Smoking & Health Risks
৮. পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা
· নিজের বাড়ি ও আশেপাশে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।
· নোংরা পানিতে চলাফেরা এড়িয়ে চলুন।
· আবর্জনা ডাস্টবিনে ফেলুন।
৯. ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
· প্রতিদিন দুইবার দাঁত ব্রাশ করুন।
· গোসল করুন নিয়মিত।
· হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন, বিশেষ করে খাবার খাওয়ার আগে ও পরে।
১০. পজিটিভ চিন্তা ও জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞতা
মন ভালো থাকলে শরীর ভালো থাকে — এই সত্য প্রতিষ্ঠিত। প্রতিদিন ৫ মিনিট কৃতজ্ঞতার চর্চা করুন। ইতিবাচক চিন্তা ও মনোভাব জীবনের গতি বদলে দিতে পারে।
আজীবন সুস্থ থাকার উপায়: একটি পরিপূর্ণ গাইড
ভূমিকা:
সুস্থতা
হলো জীবনের সবচেয়ে
বড় সম্পদ।
ধন-সম্পদ,
খ্যাতি বা ক্ষমতা যতই থাকুক
না কেন,
যদি আপনি শারীরিক
ও মানসিকভাবে
সুস্থ না থাকেন, তবে জীবনের
স্বাদ ম্লান হয়ে যায়। আজীবন
সুস্থ থাকতে হলে শুধু রোগমুক্ত
থাকাই যথেষ্ট নয়; বরং পরিপূর্ণ
স্বাস্থ্য মানে হলো শরীর, মন
এবং সমাজের সঙ্গে
সামঞ্জস্যপূর্ণ জীবনযাপন।
১.
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা
· প্রতিদিন সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন: কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন,
ফ্যাট, ভিটামিন ও মিনারেলস সমন্বয়ে
গঠিত খাবার খান।
· শাকসবজি ও ফলমূল: প্রতিদিন অন্তত
৫ রকম
ফল ও
সবজি খান।
· প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন: যেমন ফাস্ট ফুড, কোমল
পানীয়, অতিরিক্ত চিনি
বা লবণযুক্ত
খাবার।
· পর্যাপ্ত পানি পান করুন: দিনে অন্তত ৮-১০
গ্লাস পানি পান করুন।
· সময়মতো খাবার খাওয়া: খাওয়ার নির্দিষ্ট
রুটিন বজায় রাখুন।
২.
নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম
করুন
· প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন বা ব্যায়াম করুন।
· ইয়োগা বা মেডিটেশন চর্চা করুন, যা মানসিক চাপ হ্রাসে
সহায়তা করে।
· কার্ডিও এক্সারসাইজ (জগিং, সাইক্লিং, সাঁতার) শরীরকে সক্রিয়
ও হৃদয়কে
সুস্থ রাখে।
৩.
পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন
· প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান।
· রাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘুমাতে যান এবং একই সময়ে জাগুন।
· ঘুমানোর আগে মোবাইল/স্ক্রিন ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
৪.
মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন
নিন
· নিয়মিত ধ্যান (Meditation) করুন।
· মন খুলে কারো সঙ্গে কথা বলুন — মানসিক ভার কমে।
· নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে থাকুন।
· নিজেকে ভালোবাসুন ও আত্মমর্যাদা বজায় রাখুন।
· প্রয়োজনে কাউন্সেলরের সাহায্য নিন।
৫.
খারাপ অভ্যাস থেকে বিরত থাকুন
· ধূমপান ও মাদক গ্রহণ সম্পূর্ণভাবে পরিহার করুন।
· অতিরিক্ত ক্যাফেইন, চিনি ও লবণ গ্রহণ এড়িয়ে চলুন।
· অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনুন।
৬.
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা
করান
· সালমোনেলা, রক্তচাপ, রক্তে চিনি (ডায়াবেটিস), কোলেস্টেরল ইত্যাদি টেস্ট করান বছরে অন্তত একবার।
· ডেন্টাল ও চক্ষু পরীক্ষা করুন।
· টিকাদান ও স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে সচেতন থাকুন।
৭.
পরিবেশবান্ধব ও পরিচ্ছন্ন
জীবনযাপন করুন
· বাড়ি ও আশপাশ পরিষ্কার রাখুন।
· বাজারের পণ্যে রাসায়নিক কম আছে কি না খেয়াল করুন।
· সবুজ গাছপালা লাগান ও প্রকৃতির সংস্পর্শে থাকুন।
৮.
সামাজিক সম্পর্ক বজায়
রাখুন
· পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান।
· সমাজসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ করুন।
· বিভিন্ন সংস্কৃতিক, ধর্মীয় বা শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানে অংশ নিন।
৯.
মানসিক প্রশান্তির জন্য
সময় দিন
· নিজের পছন্দের শখ বা হবি গড়ে তুলুন।
· প্রকৃতিতে সময় কাটান বা ভ্রমণে যান।
· ক্লান্ত হলে বিরতি নিন — ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স বজায় রাখুন।
১০.
সতর্ক থাকুন রোগপ্রতিরোধে
· সর্দি-কাশি বা মৌসুমি রোগ থেকে বাঁচতে মাস্ক ব্যবহার করুন।
· হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
· জরুরি ওষুধ বা প্রাথমিক চিকিৎসার কিট রাখুন।
আজীবন সুস্থ থাকা কোনো ম্যাজিক
নয় — এটি আপনার দৈনন্দিন অভ্যাসের
উপর নির্ভর করে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, পজিটিভ
মানসিকতা, ভালো সম্পর্ক,
সঠিক খাদ্য ও ব্যায়ামের সমন্বয়েই আপনি
সুস্থ ও আনন্দময় জীবন উপভোগ
করতে পারেন। মনে রাখবেন, স্বাস্থ্যই
সব সুখের
মূল।
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায়
(The Ways to Stay Physically and Mentally Healthy)
ভূমিকা:
বর্তমান ব্যস্ত জীবনধারায় মানুষ প্রতিনিয়ত নানা চাপ ও উদ্বেগে ভুগছে। এর প্রভাব পড়ছে আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে। সুস্থ জীবনযাপনের জন্য শুধু শরীরের যত্ন নেওয়াই যথেষ্ট নয়, মানসিক শান্তি এবং ভারসাম্যও জরুরি। এই ব্লগে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো কীভাবে আপনি সহজ কিছু অভ্যাস মেনে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে পারেন।
১. নিয়মিত ব্যায়াম করুন
শারীরিকভাবে উপকারিতা:
· হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখে
· ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে
· রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
মানসিকভাবে উপকারিতা:
· এন্ডোরফিন হরমোন নিঃসরণ করে যা মন ভালো করে
· উদ্বেগ ও বিষণ্ণতা কমায়
· আত্মবিশ্বাস বাড়ায়
সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন, দিনে ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম করলেই ফল মিলবে।
World Health Organization on Physical Activity
২. সুষম খাদ্য গ্রহণ
আপনার খাদ্য তালিকায় থাকা উচিত—
· শাকসবজি, ফল, দানাশস্য
· প্রোটিন: ডিম, মাছ, মাংস
· স্বাস্থ্যকর ফ্যাট: বাদাম, অলিভ অয়েল
· পর্যাপ্ত পানি (প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস)
এড়িয়ে চলুন: ফাস্টফুড, অতিরিক্ত চিনি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার।
৩. মেডিটেশন ও মাইন্ডফুলনেস
উপকারিতা:
· মানসিক চাপ হ্রাস
· মনোযোগ বৃদ্ধি
· ঘুমের মান উন্নয়ন
প্রতিদিন মাত্র ১০ মিনিট মেডিটেশন করলে মানসিক ভারসাম্য রক্ষা করা সহজ হয়।
Harvard Health on Mindfulness Meditation
৪. পর্যাপ্ত ঘুম
প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। ঘুম না হলে দেখা দিতে পারে—
· স্মৃতিভ্রংশ
· রাগ বা হতাশা
· রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া
ঘুমের জন্য পরামর্শ:
· রাত ১০টার মধ্যে ঘুমাতে যাওয়া
· ঘুমানোর আগে মোবাইল বা স্ক্রিন এড়িয়ে চলা
· হালকা সঙ্গীত বা বই পড়া
৫. সামাজিক সম্পর্ক রক্ষা
সুস্থ সামাজিক বন্ধন মানসিক প্রশান্তির জন্য অপরিহার্য।
· প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটান
· নতুন বন্ধু তৈরি করুন
· কথা বলুন, শেয়ার করুন অনুভূতি
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে “সামাজিক সংযোগ” একটি শক্তিশালী প্রতিকার।
৬. সময়ের সঠিক ব্যবহার
· প্রতিদিন কাজের সময়সূচি তৈরি করুন
· বিশ্রামের জন্য আলাদা সময় রাখুন
· কাজ এবং বিশ্রামের মধ্যে ভারসাম্য আনুন
Time management মানসিক চাপ কমাতে অত্যন্ত কার্যকর।
৭. ডিজিটাল ডিটক্স করুন
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য—
· মোবাইল, ল্যাপটপ বন্ধ রাখুন
· সামাজিক মাধ্যমে সময় ব্যয় কমান
· প্রকৃতির মাঝে সময় কাটান
পরিণাম: মন শান্ত হয়, চোখের চাপ কমে, ঘুমের মান উন্নত হয়।
৮. নিজেকে উন্নত করার চেষ্টা
· নতুন কিছু শিখুন (ভাষা, দক্ষতা, শিল্পকলা)
· বই পড়ার অভ্যাস করুন
· নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
নিজেকে মূল্যবোধপূর্ণ মনে হলে মানসিক শান্তি বজায় থাকে।
৯. প্রয়োজনে মানসিক বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন
ডিপ্রেশন বা মানসিক অসুস্থতা কোনো লজ্জার বিষয় নয়।
· কাউন্সেলিং
· সাইকোথেরাপি
· প্রয়োজন হলে ওষুধ
দ্রুত চিকিৎসা মানসিক ভারসাম্য ফেরাতে সহায়ক।
National Institute of Mental Health
সুস্থ থাকার জন্য খাবারের তালিকা (Balanced Diet List)
১. শাকসবজি (Vegetables)
শরীরের জন্য ভিটামিন, মিনারেল ও আঁশ সরবরাহ করে।
· পালং শাক
· লাল শাক
· পুঁই শাক
· মিষ্টি কুমড়া
· করলা
· বেগুন
· গাজর
· ঢেঁড়স
· বাঁধাকপি
· ফুলকপি
২. ফলমূল (Fruits)
প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার ও ভিটামিন C-এর উৎস।
· কলা
· আপেল
· কমলা
· পেয়ারা
· পেঁপে
· আঙুর
· তরমুজ
· আম
· বেদানা
৩. প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার (Protein-rich Foods)
শরীরের কোষ গঠন, শক্তি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
· ডিম (সেদ্ধ/ভাজি)
· মুরগির মাংস (চর্বিহীন অংশ)
· মাছ (ইলিশ, রুই, কাতলা, টুনা)
· ডাল (মসুর, মুগ, ছোলা)
· দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার (দই, পনির)
· বাদাম (বাদাম, আখরোট, কাঠবাদাম)
· সয়াবিন
৪. শর্করা ও শক্তিদায়ক খাবার (Carbohydrate sources)
শক্তি জোগায় এবং দীর্ঘ সময় পরিপূর্ণ অনুভব করায়।
· ভাত (পরিমিত পরিমাণে)
· রুটি/চাপাটি (আটা দিয়ে তৈরি)
· ওটস
· সিমাই (ঘরে তৈরি)
· মিষ্টি আলু
· চিড়া
· মুড়ি
৫. ভালো চর্বি (Healthy Fats)
হৃদযন্ত্র ভালো রাখে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে শক্তিশালী করে।
· অলিভ অয়েল
· নারিকেল তেল (কম পরিমাণে)
· ঘি (অল্প পরিমাণে)
· বাদামের তেল
· মাছের তেল (যেমন: টুনা, সারডিন, স্যামন)
৬. আঁশযুক্ত খাবার (Fiber-rich foods)
হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে।
· ছোলা
· মুসুর ডাল
· ওটস
· ব্রাউন রাইস
· সজনে পাতা
· শসা
· কলার মোচা
সুস্থ থাকার জন্য পানীয়
· বিশুদ্ধ পানি (প্রতিদিন ৮–১০ গ্লাস)
· ডাবের পানি
· হালকা লেবু পানি
· গরম পানিতে মধু ও লেবু
· ফলের রস (চিনি ছাড়া)
যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত
· অতিরিক্ত ভাজা-পোড়া
· অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার
· ফাস্ট ফুড (বার্গার, ফ্রাইড চিকেন, পিজ্জা)
· কোল্ড ড্রিংকস, সফট ড্রিংকস
· বেশি মিষ্টি খাবার (রসগোল্লা, জিলাপি)
· প্রক্রিয়াজাত খাবার (চিপস, সসেজ, ইনস্ট্যান্ট নুডলস)
দিনে কখন কী খাবেন? (সতর্ক সময়ানুসারে খাবার গ্রহণ)
সময় |
খাবারের ধরণ |
উদাহরণ |
সকাল ৭–৮টা |
হালকা প্রাতরাশ |
ওটস + কলা/ডিম + রুটি |
সকাল ১০টা |
স্ন্যাকস (হালকা খাবার) |
১টি ফল + বাদাম |
দুপুর ১–২টা |
মধ্যাহ্নভোজ (মূল খাবার) |
ভাত/রুটি + মাছ/ডাল + সবজি |
বিকেল ৫টা |
স্ন্যাকস |
মুড়ি + লেবু + পেঁয়াজ / ফল |
রাত ৮টা |
রাতের খাবার |
রুটি/ভাত + ডিম/মুরগি + সবজি |
রাত ১০টা (ইচ্ছা) |
ঘুমের আগে হালকা কিছু |
১ গ্লাস গরম দুধ (চিনি ছাড়া) |
অতিরিক্ত সচেতনতা
· খাওয়ার আগে ও পরে হাত ধুয়ে নিন।
· খাবার ভালভাবে রান্না করুন।
· নিয়মিত সময়মতো খাবার খান।
· অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
· ঘুম ও ব্যায়ামের সঠিক রুটিন মেনে চলুন।
উপসংহার
সুস্থ থাকার জন্য ব্যয়বহুল কোনো চিকিৎসা বা কঠিন নিয়মের প্রয়োজন নেই। বরং প্রতিদিনের ছোট ছোট অভ্যাসগুলোই আমাদের সুস্থ রাখতে পারে। সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক শান্তি এবং পরিচ্ছন্নতাই সুস্থতার মূল চাবিকাঠি। নিজে সচেতন হোন, অন্যকেও সচেতন করুন।
প্রশ্নোত্তর (FAQ)
প্রশ্ন ১: প্রতিদিন কত ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি?
উত্তর: একজন প্রাপ্তবয়স্ক
ব্যক্তির জন্য দিনে ৭-৮
ঘণ্টা ঘুমানো আদর্শ।
প্রশ্ন ২: প্রতিদিন কতটুকু পানি খাওয়া উচিত?
উত্তর: দিনে গড়ে
৮-১০
গ্লাস বা ২-৩ লিটার
পানি খাওয়া উচিত।
প্রশ্ন ৩: মানসিক চাপ কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় কী?
উত্তর: মেডিটেশন, যোগব্যায়াম এবং
নিজের পছন্দের কাজ করলেই মানসিক
চাপ কমে।
প্রশ্ন ৪: কোন খাবারগুলো শরীরের জন্য সবচেয়ে উপকারী?
উত্তর: ফলমূল, শাকসবজি,
ডিম, মাছ, ডাল এবং দুধ
জাতীয় খাবার।
প্রশ্ন ৫: সুস্থ থাকতে ধূমপান কীভাবে এড়ানো যায়?
উত্তর: নিজের ইচ্ছাশক্তি,
বন্ধুমহলের সহায়তা এবং
প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে
ধূমপান ছাড়ার চেষ্টা
করুন।